কম্পিউটার-তথ্য-উপাত্ত-বিশ্লেষণ-ও-দ্রুত-সিদ্ধান্ত
আবিষ্কারের গল্প কম্পিউটার
কম্পিউটার চার্লস ব্যাবেজ ও বর্তমান যুগকম্পিউটার, চার্লস ব্যাবেজ ও বর্তমান যুগ। বিজ্ঞানের যুগ বিজ্ঞান তার নিরলস প্রচেষ্টায় আমাদেরকে নিত্য নতুন আবিষ্কারের মাধ্যমে হতবাক করে দিচ্ছে। এক বিস্ময়ের ঘোর কাটতে না কাটতে আরেক বিস্ময় হাজির হয়। আমরা স্তম্বিত হয়ে দেখি বিজ্ঞানের এই বিস্ময়কর অগ্রগতি বর্তমানে বিজ্ঞানের এক নতুন এবং অত্যাধুনিক চমক কম্পিউটার। নিদর্শন এই যন্ত্রের আবিষ্কার বর্তমান যুগে নিয়ন্ত্রণ করছে এই কম্পিউটার।
কম্পিউটার বলতে কি বুঝায়
কম্পিউটার বলতে আসলে কি বুঝায়কম্পিউটার বলতে এমন একটি ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রকে বোঝায় যা অগণিত উপাত্ত ও তথ্য গ্রহণ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্লেষণ করে দ্রুত সিদ্ধান্ত দিতে পারে। কম্পিউটার শব্দের বাংলা অর্থ গঠনতন্ত্র। এর উৎস ইলেক্ট্রন। এর কাজ অত্যন্ত দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য। টাইপ রাইটার, লাইন প্রিন্ট, কার্ড রিডার, কার্ড পাঞ্চিং, ম্যাগনেটিক, টেপ, ট্রানজিস্টর, সার্কিট ইত্যাদি সর্বাধুনিক গণনামূলক ব্যবস্থায় হচ্ছে কম্পিউটার। ব্রিটিশ গণিতবিদ চার্লস ব্যাবেজ। তিনি কম্পিউটার তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে প্রথম এনালিটিকাল ইঞ্জিন ও ডিফারেন্স ইঞ্জিন নামে দুটি কম্পিউটার আবিষ্কার করেন।
কম্পিউটার এর প্রাথমিক কাঠামো
কম্পিউটারের মূল গঠন উপাদানবর্তমানে কম্পিউটার যে রকম উন্নত এরকমটা প্রথম অবস্থায় ছিল না। প্রাথমিক কাঠামো সরল থাকলেও বিবর্তনের সাথে সাথে এটি জটিল ও উন্নত হয়েছে। কম্পিউটারের মূল গঠন উপাদান পাঁচটি: ইনপুট, স্টোরেজ, কন্ট্রোল, প্রসেসিং এবং আউটপুট। আধুনিক কম্পিউটার তিন প্রকার: - এনালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার এবং হাইব্রিড কম্পিউটার। কম্পিউটার একটি স্বয়ংক্রিয় বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা বিভিন্ন ডাটা ও হিসাব নিকাশ এবং সেগুলোর প্রিন্টিং কার্যসম্পন্ন করতে পারে। এর মেমোরিতে অসংখ্য প্রোগ্রাম সেট করা আছে। কম্পিউটার কে যেভাবে চালনা করা হয় সে নির্দেশ মোতাবেক ফলাফল দেয়। এর কার্যপ্রণালী ঠিক মস্তিষ্কের মতো।
কম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা ও সৃষ্টি
কম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা ও সৃষ্টিকম্পিউটারের প্রাথমিক ধারণা সৃষ্টি হয় ১৮৩৩ সালে। কিন্তু 1946 সালের 15 ফেব্রুয়ারি পূর্ণাঙ্গ ইলেকট্রনিক কম্পিউটার আবিষ্কৃত হয়। এর সাহায্যে সেকেন্ডে তিন শত কোটি গুণনের কাজ করা সম্ভব হতো। যুদ্ধের সময় আমেরিকার সেনাবাহিনী এর মাধ্যমে গোপন তথ্য বের করত। আজকের কম্পিউটার ইনিয়াক এর উন্নততর রূপ। সময়ের সাথে সাথে এর গঠন প্রণালীর ক্রমান্নতি হইছে। গঠন প্রণালীর এক একটি ধারাকে বলা যেতে পারে এক একটি জেনারেশন। তিনটি জেনারেশন পার করে বর্তমানে কম্পিউটারের চতুর্থ জেনারেশন চলছে। এটি মধ্যে আমাদের দেশে ৬৪০ আইবিএম, ENIAK-1, সিস্টেম ৩৬০, আই সি এল ২৯০০, ৪৩০০ এর ব্যবহার করা হচ্ছে, তাছাড়া সুপার কম্পিউটার CRAY-1, CEREY-2 এর ব্যবহারও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আধুনিক বিশ্বের এক বিস্ময় কম্পিউটার
কম্পিউটারের মাধ্যমে যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণকম্পিউটার আধুনিক বিশ্বের এক বিরাট বিস্ময়। এমন কাজ নেই যার সমাধান কম্পিউটারের মাধ্যমে করা সম্ভব নয়। যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ, প্লেন ও ট্রেনের আসন সংরক্ষণ, বিভিন্ন প্রকার ভিডিও গেম খেলা সবই কম্পিউটার মাধ্যমে সম্ভব হয়ে থাকে। কম্পিউটার মানুষের মনের চিন্তা ধারা বলে দিতে পারে। ভাস্কর কম্পিউটার নির্দেশ পেলে যেকোনো ভাস্কর হুদাই করতে পারে। কম্পিউটারের সাহায্যে ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধী ধরা যায়। এজন্য সকল প্রতিষ্ঠানের কম্পিউটারের চাহিদা সর্বাগ্রে। বর্ণপরিচয় থেকে শুরু করে পাঠ্য বিষয়ের সকল শিক্ষাই কম্পিউটার শেখাতে পারে। তাই কম্পিউটার দিয়ে আধুনিক বিশ্বের শ্রেষ্ঠ বিস্ময় এ বিষয়ে কারো দ্বিমত থাকার অবকাশ নেই।
কম্পিউটারের ব্যবহার
বর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার ব্যবহার দ্রুত ও নির্ভুল গণনাবর্তমান বিশ্বে কম্পিউটার ব্যবহার বিচিত্র। দ্রুত ও নির্ভুল গণনা এবং তথ্য সংগ্রহ করে সঠিক হিসাবের ক্ষেত্রে সহজ। যন্ত্র হচ্ছে কম্পিউটার। রোগীর রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও স্বল্প সময় ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে এর মাধ্যমে। এটি বাৎসরিক দিনপঞ্জি হিসাবেও কাজ করছে। কম্পিউটারের বদৌলতে আজকাল মানুষের কণ্ঠস্বর শুনে তাকে সনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে। গবেষণা ক্ষেত্রে ও পুস্তক প্রকাশনায় কম্পিউটার বিস্ময়কর অবদান রাখতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষা বিস্তারে এর ব্যবহার খুবই প্রশংসনীয়। আজকাল পরীক্ষার খাতাও দেখা হয় কম্পিউটারের মাধ্যমে। এ সকল অত্যাবশ্যকীয় কাজের মাধ্যমে কম্পিউটার আমাদের প্রত্যাহিত জীবনের একটি ব্যবহারযোগ্য উপাদানরূপে পরিগণিত হয়েছে।
কম্পিউটারের উদ্ভাবন ও আধুনিক যুগ
কম্পিউটারের উদ্ভাবন ও বিকাশ আধুনিক যুগের এক চরম বিস্ময়কম্পিউটারের উদ্ভাবন ও বিকাশ আধুনিক যুগের এক চরম বিস্ময়। মানুষ যে কাজটাকে মাথা ও স্মৃতি দিয়ে করতো আজ তা হচ্ছে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে। এর অবদান সারা বিশ্বের ঘরে ঘরে প্রাত্যহিক ক্রিয়াকর্মে অসামান্য, অকল্পনীয় ও অভাবনীয়। বর্তমান যুগ জটিল যুগ। কম্পিউটার সেই জটিলতাকে সহজ সরল ও নির্ভুল পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। যদিও কম্পিউটার আমাদের হাতের কাজ এবং মেধার বিকাশ কে নিয়ে নিয়েছে, ও বেকারত্বের দাবানল জ্বালিয়ে মারছে, তবুও এর প্রয়োগের মধ্য দিয়ে আমাদের নতুন নতুন কর্মসংস্থানের উপায় খুঁজে বের করতে হবে। আগামী দিনে এই কম্পিউটার আমাদেরকে দেবে আরো নতুন নতুন বিস্ময়কর উপহার। অর্থনৈতিক পরিকল্পনার যুগে কম্পিউটারের মূল্য অনেক বেশি।
সর্বশেষ কথা
সর্বশেষ কথা বা উপসংহারসর্বশেষ কিছু কথা না বললেই নয়, কম্পিউটার যেমন মানুষের প্রাত্যহিক জীবন-মান উন্নত এবং সহজ করেছে ততটাই ঝুঁকি ও বিপদজনক ও বটে। যদি আমরা এর সুষ্ঠ এবং সঠিক ব্যবহার করি তবে মানবজাতির কল্যাণ এবং উন্নতি, আর যদি এর অপব্যবহার ও খারাপ দিকগুলো ব্যবহার বাড়তে থাকে তবে তা আগামী প্রজন্মের জন্য হবে মহাবিপদ সংকেত। যাই হোক মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব যে কোন সৃষ্টি মানুষের কল্যাণে আসবে। কিছু অসৎ, অসাধু লোক অসৎ উপায় অবলম্বনের চেষ্টা করবে তা থেকে জাতি এবং আমাদেরকে সাবধান এবং সচেষ্ট থাকতে হবে। তবেই জাতির ও আমাদের কল্যাণ।
এসা বিডি ডটকম এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url